Wednesday, August 7, 2019

মেকাপ ছাড়া বউ 

অবশেষে আমার মনস্কামনা পূর্ণ হলো। ফুলসর্যা সাকসেসফুল। তখন প্রায় ভোর চার টে বাজে। দেখলাম বউ ঘুমিয়ে পড়েছে আমিও ঘুমিয়ে পরলাম। প্রায় সকাল ১০ টার সময় ঘুম থেকে উঠলাম। উঠে দেখি পাশে বউ নেই। বাথরুমে যেতে হবে, পেটও তারা দিচ্ছে। বাথরুমের দরজায় ধাক্কা দিলাম, বউ সারা দিলো আমি ভেতরে আছি। আমি ধাক্কার ওপর ধাক্কা দিয়ে বললাম, তাড়াতাড়ি দরজাটা খোলো নাহলে এইখানেই করে ফেলবো আর পরিস্কার তোমাকেই করতে হবে। তাড়াতাড়ি করে বউ দরজাটা খুলে বাইরে বেরিয়ে এলো। আমি দেখে দু মিনিট হ্যাঁ করে দাঁড়িয়ে রইলাম। তারপর আমি বললাম তুমি কে? ও বললো মানে! কাল আমার সাথে রাত কাটিয়ে এখন বলছো আমি কে? আমি তোমার বউ, আবার কে?

এই কথা শোনা মাত্রই আমি মুহূর্তের মধ্যে ভুলে গেলাম যে, আমি এখানে কেনো এসেছিলাম। আমি চিৎকার করে বলে উঠলাম বউ মনে? এই ভাবে বেশ কিছুক্ষন একে অপরের সাথে বেশ কিছুক্ষন বোঝাপড়া হলো। চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে ছেলের বাবা মা উপস্থিত। হঠাৎই তারা দুজনে তাদের ছেলের সাথে ঝগড়া হওয়া মায়েটির দিকে তাকিয়ে   বলে উঠলেন এটা কে? তখন মায়েটি তাদের দিকে কাঁদো কাঁদো মুখে তাকিয়ে কি বলছেন মা? কি বলছেন বাবা? আমি আপনাদের বৌমা। আপনারা নিজে পছন্দ করে আমাকে এ বাড়িতে নিয়ে এসেছেন। এমন কথা বলবেন না। শশুর, শাশুড়ি সমানে বলতেই থাকলো, না তুমি আমাদের পছন্দ করে আনা সেই অপরূপ সুন্দরী ময়েটি নও।

গুরুদেব (অরিজিৎ সিং)

তার মানে ওরা আমাদের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে। আমরা যে মেয়েকে ছেলের বউ হিসাবে নির্বাচন করেছিলাম, সেই মেয়েকে বদল করে, আমাদের না জানিয়ে ওরা অন্য মেয়ের সাথে আমার ছেলের বিয়ে দিয়েছে।  ছেলের বাবা মা বললো মেয়ের বাবা মা কে ফোন করে ডাকা করলো। মেয়ের বাবা মা আসা মাত্রই ছেলের বাবা মা- এই সবের মনে কি বেয়াই মশাই ? আপনারা এ কোন মেয়েকে আমার বাড়িতে পাঠিয়েছেন? এ তো আমার পছন্দ করা মেয়ে নয়। এ আপনি কি বলছেন বেয়াই মশাই এ আমারই মেয়ে। একেই আপনারা বাড়ির বউ করে নিয়ে এসেছেন। এই ভাবে বেশ কিছুক্ষন তাদের মধ্যে ঝগড়া- ঝাটি হলো। এরই মধ্যে বৌমাও বুঝে গেলো তারা কেনো তাকে চিনতে পারছিলনা।

যখন মেয়েটিকে প্রায় তাড়িয়ে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ঠিক সেই সময়, মেয়েটি বলে উঠলো! আমাকে  ৫ মিনিট সময় দেওয়া হোক। আপনারা আমাকে আগে যেভাবে দেখেছেন, ঠিক সেই ভাবেই দেখতে পাবেন। আর তুমিও তখন তোমার স্ত্রীকে চিনতে পারবে। তখন স্বামী- মানে...? স্ত্রীকে চিনতে পারব, ৫ মিনিট সময় দেওয়া হোক,যেভাবে দেখেছেন এইসব কথার মনে কি। আসলে আপনারা যখন প্রথমবার আমাকে দেখতে যান, তখন আমি বিউটি পার্লার থেকে মেকআপ করে এসেছিলাম। আর তোমার সাথে বিয়ে ঠিক হওয়ার পর, যতবার তোমার সাথে বেড়াতে গেছি ততবার  আমি মেকআপ করে গেছি।

এক রাতের জন্য ভালোবাসা Love for one night

তোমার মনে আছে যেদিন প্রথম তুমি আমাদের বাড়িতে এসেছিলে আমাকে বেড়াতে নিয়ে যাবে বলে। নিজেকে বাঁচানোর জন্য সেদিন আমি তোমার গাড়ির চাকাতে পেরেক ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম। কারন সেদিন বৃহস্পতি বার ছিল, আর বৃহস্পতি বার ওই বিউটি পার্লার টা বন্ধ থাকে। তখন স্বামী- বন্ধ ছিল তাহলে অন্য পার্লার এ যেতে পারতে, না হলে আপনাকে বলতে পারতে বিয়ের আগে না হয় একটা পার্লারের কর্মী গিফট করতাম। স্বামী তখন মনে মনে- তার মানে কাল রাতে আমি যার সাথে ওইসব করলাম সেটা ফেক বউ। স্বামী কাঁদতে কাঁদতে তুমি কেনো এভাবে আমার জীবন টা নষ্ট করে দিলে, আমি এবার কি নিয়ে বাঁচবো? কিন্তু মনে মনে যা হয়েছে ভালোই হয়েছে, আমার জেটার দরকার সেটা তো পেয়েছি।

ভালোই হবে যদি একে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়, তাহলে আবার বিয়ে হবে, আবার মধুচন্দ্রিমা হবে। উফ! আমি খুব খুশি। বাবা আমি আর এই মেয়ের সাথে থাকতে চাইনা, আমি ডিভর্স চাই। ডিভোর্স মানে, ডিভোর্স মানে টা কি? তোমরা এখানে ৫ মিনিট দাঁড়াও আমি এক্ষুনি বিউটি পার্লার থেকে মেকআপ করে আসছি। থাক তার আর দরকার নেই, তার আর দরকার নেই মনে? দরকার হলে আমি প্লাস্টিক সার্জারি করে নিজের গায়ের রঙ বদলে ফেলবো কিন্তু ডিভোর্স দেবনা। এই কথা বলে বউ পার্লারে গেলো এবং মেকাপ করে এসে যখন দাঁড়ালো..., তাকে দেখে সবাই অবাক হয়ে গেল। আর ছেলেটা মনে মনে বলে উঠলো-

"করে দিয়েছে সাদা, যে ছিল একটু আগে কালো সাপ
কর জোরে প্রণাম তোমায় বিউটি পার্লারের   মেকাপ।"

আমার তখন ক্লাস নাইন


সেদিন স্কুলে প্রথম ক্লাস ছিল অমিও বাবুর। স্যারের বরাবরই পেটের ওপরে প্যান্ট পড়া অভ্যাস।আমি তখন ক্লাস নাইন এ পড়ি। স্যার যত প্যান্টটা উপর দিকে টেনে তুলতো, ততই নিচের দিকে নেমে যেত। গোটা ক্লাস ভত্তি, স্যার পেটটা উঁচু করে, প্যান্টটা নাড়াতে নাড়াতে দরজা দিয়ে ক্লাস রুমে প্রবেশ করতে না করতেই ক্লাসে থাকা সকল ছাত্র ছাত্রী হা হা হা...করে হেঁসে উঠল আর হাততালি দিতে লাগলো। ক্লাসের সবচেয়ে সুশীল, নিশ্চুপ ছেলে সুদীপ্তও হেঁসে উঠল। তা দেখে স্যার মনে মনে কিছু একটা ভাবলো। হয়ত স্যার ভাবছিল সব ছাত্র ছাত্রী গুলোই তো বখাটে হাঁসাহাঁসি করে। কিন্তু সুদীপ্ত কেনো হাঁসছে সেটা  বুঝতে পারছিনা। আসলে স্যার বুঝতেই পারেনি যে স্যারের প্যান্টের চেইন খোলা। আর সেই খোলা জায়গাটা দিয়ে স্যারের প্যান্টের ভিতর ইন করে রাখা জামার খানিকটা অংশ বাইরে বেরিয়ে গেছে। আর সবাই সেটা দেখেই হাঁসাহাঁসি করছিল।

এরপর স্যার এসে সেই ১০০ বছর আগের পুরোনো চেয়ারের উপর বসলো। চেয়ারে বসতেই পোঁ...করে একটা শব্দ হলো। সেই শব্দে গোটা ক্লাস হা হা করে হাঁসতে শুরু করলো। স্যার দেখলো কেউ একটা বাঁশি স্যারের চেয়ারের উপর রেখে দিয়েছে। স্যার চেঁচিয়ে গম্ভীর শব্দে ধমক দিয়ে বললো তাড়াতাড়ি বল এই কাজটা কে করেছিস, নাহলে এক্ষুনি সবাইকে ক্লাস থেকে বার করে দেবো। আর সকলের গার্জেন কে স্কুলে ডাকা করাবো। সেদিন কেউ বলেনি ছেলেটা আসলে কে ছিল। তবে সেই ছেলেটা আসলে আমিই ছিলাম, স্যার সেটা বুজতে পারেনি। 
স্যার নাম ডাকা শেষ করে, ক্লাস শুরু করলেন। স্যার সবসময় প্রতিযোগিতামূলক কাজে অংশগ্রহণ করতে একটু বেশিই ভালোবাসতেন। স্যার সকল ছাত্রী ছাত্রীদের বললেন, আজ তোমাদের এক কুইজ প্রতিযোগিতা হবে। ছেলে আর মেয়েদের মধ্যে। যারা প্রথম হবে তাদের সকলকে আমি রেস্টুরেন্টে নিয়ে যাবে। আমরা সবাই শুনে খুব খুশি হলাম। এই কুইজ প্রতিযোগিতা অন্য কুইজ প্রতিযোগিতার থেকে একটু আলাদা হবে। আমি পর পর চারটি প্রশ্ন করবো এবং ছেলে বা মেয়েদের থেকে যেকোনো একজন এই প্রশ্নের উত্তর দেবে। 

আর মজার ব্যাপারটা হলো এই চারটি প্রশ্নের দেওয়ার জন্য তোমাদের কাছে সময় থাকবে মাত্র চার সেকেন্ড। তবে আগে ছেলেরা না আগে মেয়েরা এই চারটি প্রশ্নের উত্তর দেবে, সেটা ঠিক তোমাদেরকে করা আমার একটি প্রশ্নের মাধ্যমে। আর আমি প্রশ্ন শেষ করার সাথে সাথে তোমরা হাত তুলবে, তবে  যে প্রশ্নের উত্তর জানবে কেবলমাত্র সে হাত তুলবে এবং যাদের দল থেকে যে হাত তুলবে তাকে আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে মাত্র এক সেকেন্ডের মধ্যে। 

তো স্যারের কথা মত আমরা তৈরি হয়ে গেলাম। স্যার আমাদের প্রশ্ন করলেন, আমাদের দেশ ভারত বর্ষের প্রক্তন রাষ্ট্রপতি ড. এ পি জে আব্দুল কালাম এর পুরো নাম কি? কেউ এই প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারায় স্যার বললেন এ পি জে আব্দুল কালাম এর পুরো নাম আবুল পাকির জৈনাল আব্দিন আব্দুল কালাম। এরপর স্যার আমাদের অন্য একটি প্রশ্ন করলেন, প্রশ্নটি হলো- এমন দুজনের নাম বলো যার কাছে মানুষ সবসময় সত্যি কথা বলে। অনেকে অনেক রকম উত্তর দিলো, কিন্তু কারোর উত্তরেই স্যার ঠিক খুশি হলেন না। অনেকে বললো পুলিশ, স্যার বললেন মানুষ সংকোচবোধ না করে বলে এমন কারোর নাম বলো? 
তখন একজন বললো ভগবান, তার দেখাদেখি সবাই বলতে শুরু করলো ভগবান। স্যার এই উত্তরেও খুশি হলেন না। এমন কোনো নাম বলো যার অস্তিত্ব পৃথিবীর সকল মানুষ অনুভব করতে পারে। তখন ক্লাসের সব থেকে ফাজিল ছেলেটা মানে আমি উঠে বললাম, স্যার মানুষ সবসময় তার বউ এর কাছে সত্যি কথা বলে। এই শুনে ক্লাসের সবাই হা হা করে হেঁসে উঠল। স্যার তখন রেগে গিয়ে বললো, তোমার মত মাথা মোটা ফাজিলের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি আর কি বা আশা করা যায়। অন্য একটি ছেলে উঠে বললো স্যার ডাক্তার আর উকিলের কাছে মানুষ সবসময় সত্যি কথা বলে। স্যার বললেন একদম ঠিক উত্তর। এবার আমি যেই প্রশ্নটা বলছি তার সঠিক উত্তর দিতে পারলে সব ছেলেদেরকে রেস্টুরেন্টে খাওয়াতে নিয়ে যাবো। 

তাড়াতাড়ি বলো প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রীর নাম কি? ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কোথায় অবস্থিত? যেকোনো একটি বাইকের গতিবেগ কত? হাঁস কি দেয়?

এরপর ক্লাসের সবথেকে ফাজিল ছেলেটা মানে আমি উঠে মাত্র চার সেকেন্ডের মধ্যে উত্তর দিয়ে সবাইকে চমকে দিলেন, আমি বললাম অর্পিতা কলকাতায়  ১৫০ কিমি বেজে ডিম দেয়। আমার উত্তর শোনার পর স্যার আমাকে ধমক দিয়ে বস করিয়ে দিলো। স্যার আমি আপনাকে একটা প্রশ্ন করছি বলতে পারলে আপনি যা খেতে চাইবেন তাই খাওয়াবো। 
স্যার বললেন ঠিক আছে বলো, স্যার বলুনতো পৃথিবীর সব থেকে অসুখী বাবা কে?

স্যার ঘাবরে গিয়ে মাথা চুলকোতে শুরু করলেন। বললেন না পারবোনা, তুমি বলো। স্যার পৃথিবীর সবথেকে অসুখী বাবা হলো কাক, কেনো জানেন? কারণ কাকের বাচ্চারাও বাবাকে কা কা বলে ডাকে। সবাই শুনে হা হা করে হাসতে শুরু করলো এবং স্যারও আর হাঁসি চেপে রাখতে পারলেন না।

No comments:

Post a Comment

যদি কোনো ব্যক্তি নিজের প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে কবিতা লেখাতে চান তাহলে আমাকে কমেন্ট করে বলুন আমি আমার সার্থ অনুযায়ী আপনার হৃদয়স্পর্শী আবেগানুভূতি সম্মৃত কবিতা লেখার আপ্রাণ চেষ্টা করব।

ব্লগার এ নতুন এসেছি আপনাদের বন্ধু PK
ভালো লাগলে কবিতা আমার
শেয়ার এবং কমেন্ট অবশ্যই করবেন লিখে।

আমার লেখা অন্যান্য কবিতাগুলি পরবেন আশা করছি আপনার খুব ভালো লাগবে।